ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে মো.নোমান(২৭)নামে এক যুবক নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।এ ঘটনায় মো.রাসেল(পুলিশের গাড়ি চালক)ও মো.সজীব নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঘটনার পর দৌলতখান ফায়ার সার্ভিস ও দক্ষিণ জোন কোষ্টগার্ডের একটি ডুবুরিদল নোমানকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার(২৪নভেম্বর)দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাতার খাল মাছ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ)মো. আসাদুজ্জামান দুই কনস্টেবল বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিখোঁজ নোমান দৌলতখান উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের মো.আবুল কালাম ব্যাপারীর ছেলে এবং এক সন্তানের জনক৷তিনি পেশায় দিন মজুর।দৌলতখান পাতার খাল মাছ ঘাটে শ্রমিকের কাজ করতেন নোমান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় দিন মজুরি ইসমাঈল,ফারুক, গুণী ও নোমানসহ আরো ৭/৮জন পাতার খাল মাছ ঘাট মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় জুয়া খেলছিল।
এসময় দৌলতখান থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) স্বরুপ কান্তি পালের নেতৃত্বে পুলিশ কনস্টেবল রাসেল ও সজীব নোমানদের জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে।
এসময় ফারুক,ইসমাইল, রুবেল ও নোমান পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে যায়।এদের মধ্যে ফারুক,ইসমাইল ও রুবেল সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও নোমান পানিতে ডুবে যায়।
ফারুক ও রুবেল জানান,পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তাঁরা ৪জন মেঘনা নদীতে পড়ে যায়।এদের মধ্যে তাঁরা ৩জন সাঁতরে তীরে উঠে যায়।এরই মধ্যে পুলিশ উপর থেকে নোমানকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকে।তাদের ধারণা পুলিশের নিক্ষেপ করা ইট নোমানের মাথায় লেগে মাথা আঘাত প্রাপ্ত হয়।যাঁর কারনে নোমান সাঁতরে তীরে উঠতে পারেনি।
দৌলতখান পৌরসভা ২নম্বর ওয়ার্ডের মো.আমিন মাঝির ছেলে মো.রিয়াজ উদ্দিন বলেন,নদীর মধ্যে পড়ে নোমান বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল।এসময় তিনি(রিয়াজ)নোমানকে নদী থেকে উদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।এসময় এসআই স্বরুপকান্দি পাল তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।
এদিকে নোমানের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাঁর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।তাঁর স্ত্রী,ছেলে,বাবা-মা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানান।তাঁরা এ ঘটনায় জড়িত পুলিশের উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান।ঘটনার পর দৌলতখান ফায়ার সার্ভিস ও বরিশালের একটি ডুবুরিদল নোমানকে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছেন।
দৌলতখান ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো.শাহাদাত হোসেন জানান,বিকেল ৫টা থেকে ডুবুরিদল নোমানকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এখনো নোমানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আসাদুজ্জামান (প্রশাসন ও অর্থ)খান জানান,এ ঘটনায় ভোলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে কনস্টেবল রাসেল ও সজীবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।ঘটনাটির তদন্ত চলমান রয়েছে।তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।