ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে গিয়েছিলেন কারাগারে।সেখান থেকেই পালাক্রমে তাদের পরিচয়।কারাগারে থাকাকালীন পরিকল্পনা অনুযায়ী গড়ে তোলেন আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রদল।কারাবাস থেকে বের হয়েই চক্রটি ফরিদপুর,রাজবাড়ী,গোপালগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় খুন,ডাকাতি,চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্ম শুরু করেন।এলাকাভিত্তিক ডাকাত সর্দারের দায়িত্ব নেন দুজন,কেউ দায়িত্ব নেন অস্ত্র সরবরাহের কাজ।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার এমকে ডাঙ্গী গ্রামে এক প্রবাসীর বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনায় মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন এ চক্রের ৬জনসহ ৯ জন।ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জনের নেতৃত্বে চরভদ্রাসন থানার ওসি মিন্টু মন্ডল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র,একটি দা,একটি ছেনদা,দুটি চাইনিজ কুড়াল জব্দসহ ডাকাতি হওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে(১১আগস্ট-২০২২ইং)ফরিদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত)জামাল পাশা।এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল)সুমন রঞ্জন সরকার,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ডিএসবি)মো.হেলাল উদ্দিন ভূইয়া, কোতয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল,চরভদ্রাসন থানার ওসি মিন্টু মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানার বিএসডাঙ্গী গ্রামের তোতা শেখের ছেলে মোঃ রুবেল শেখ (৩৪),মোঃ মোতালেব পত্তনদারের ছেলে মোঃ নাইম পত্তনদার(২২),পরেশ সরকারের মেয়ে প্রার্থনা সরকার(২৭),চরবান্দিয়া মুন্সিডাঙ্গী গ্রামের গোলাম মাওলা মুন্সির ছেলে ইমন মুন্সি(২৬),সালথা উপজেলার জয়কাইল ছোট বাবুইখোলা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শুক্কুর মাহমুদ মোল্লার ছেলে মোঃ জিহাদ মোল্লা(২৪),মধুখালী থানার দাশপাড়া গ্রামের হোসেন গাজীর ছেলে মামুন শেখ(২৭),কোতয়ালী থানার ভাটি কানাইপুর গ্রামের অসীম কর্মকারের ছেলে অন্তর কর্মকার(২২),বোয়ালমারী থানার দেউলি গ্রামের ইউসুফ মোল্লার ছেলে বিল্লাল মোল্লা (২৪) ও রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার শালমারা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র রিয়াজুল শেখ(৩৫)
পুলিশ জানায়,গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ফরিদপুর কারাগারে রিয়াজুল ২বছর ও রুবেল ১বছর ছিলেন এবং মামুন ও বিল্লাল বিভিন্ন সময় কারাগারে গিয়েছে।সেখান থেকে পরিচয় এবং আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র গড়ে তোলেন।প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় নাঈম নামের উঠতি বয়সের ছেলেটি তাদের অস্ত্র সরবরাহ করে।
ডাকাতির পরে প্রার্থনা সরকার তার স্বামীকে নিয়ে স্বর্ণালংকার বিক্রি করে অন্তর কর্মকারসহ কয়েকটি জুয়েলারী দোকানদারের কাছে।এরমধ্যে অন্তর কর্মকার তাদের পরিচয় না লিখেই স্বর্ণ ক্রয় করে। এছাড়া মামুন আন্তঃজেলা বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার চুরির মূলহোতা এবং তার নামে খুন,ডাকাতি,চুরিসহ ৩টি মামলা রয়েছে।রিয়াজুলের নেতৃত্বে বোয়ালমারী, সালথা,নগরকান্দাসহ কয়েকটি এলাকায় অপকর্ম চালায় চক্রটি।তার নামে অস্ত্র, খুন,ডাকাতিসহ ৫টি মামলা রয়েছে।রুবেলের নেতৃত্বে চরভদ্রাসন, সদরপুরে বিভিন্ন অপকর্ম করে চক্রটি।তার নামেও খুন,ডাকাতি,চুরিসহ ৫টি মামলা রয়েছে।ডাকাত ইমনের নামেও খুন,ডাকাতি,ধর্ষণ ও চুরিসহ ৫টি মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন,গত ২আগস্ট চরভদ্রাসন উপজেলার এমকে ডাঙ্গী গ্রামের সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি হয়।এসময় গ্রিল ভেঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রীর শয়ন কক্ষে মুখোশধারী ৪জন ডাকাত প্রবেশ করে।এ সময় ওই প্রবাসীর স্ত্রীর হাত মুখ বেঁধে ফেলে এবং ছোট ছোট দুই ছেলে মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা পয়সা নিয়ে যায়। ডাকাতির ঘটনায় চক্রটির ৬জন অংশগ্রহণ করে।এ ঘটনায় চরভদ্রাসন থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযানে চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।