গাইবান্ধায় সাংবাদিক ফরহাদের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ।গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করে নৌকা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ডিবি পুলিশ সেজে চরাঞ্চলের বিভিন্ন দোকানের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই বাছাই করে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কথিত সাংবাদিক ফরহাদুল ইসলাম ফরহাদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কশিম বাজারে গত ১৫সেপ্টেম্বর শারিরীক প্রতিবন্ধী দোকানদার ইসলাম মিয়ার”ইশা মণি স্টোরে” দোকানের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই করেন কথিত সাংবাদিক ফরহাদসহ আরো কয়েকজন।দোকানে সার বিক্রির লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় ইসলাম মিয়াকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে পনেরো হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন ফরহাদ। দোকানদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আইনের ভয় দেখিয়ে চাপের মুখে ফেলে আট হাজার টাকা নিয়ে ফরহাদ অন্যান্য দোকানে লাইসেন্স যাচাই করেন।
স্থানীয়রা জানায়,কথিত সাংবাদিক ফরহাদুল ইসলাম ফরহাদ’গণ উন্নয়ন কেন্দ্র’লেখা সম্বলিত লাইফ জ্যাকেট পরে কাশিম বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মতোই দোকান পরিদর্শন করেন।পরে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)কে অবগত করেন এবং জানতে পারেন ফরহাদ প্রশাসনের কেউ না।পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলামকে মুঠোফোনে স্থানীয়রা ঘটনাটি জানালে চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক ভাবে পরিষদের দফাদারকে কথিত সাংবাদিক ফরহাদসহ অন্যান্যদের আটক করার নির্দেশ দেন।পরে স্থানীয়রাসহ দফাদার খেয়াঘাটে গিয়ে নৌকা আটকিয়ে প্রতিবন্ধী দোকানদারের আট হাজার টাকা উদ্ধার করেন এবং ফরহাদ নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ঘটনাস্থান ত্যাগ করেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ফরহাদুল ইসলাম সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও নাট্য সম্পাদক এবং দৈনিক ভোরের সময় পত্রিকার রিপোর্টার।
কাশিম বাজারের এসআর টেলিকমের প্রোপাইটর লাভলু মিয়া,মুরগী ব্যবসায়ী সুজা মিয়াসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন,ডিবি পরিচয়ে বাজারের কয়েকটি দোকানে অভিযান চালায়।এতে অনেকেই ভয়ে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়।এসময় তারা ইসলামের দোকান থেকে ৮হাজার টাকা নিয়ে নেয়।পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে নৌকা আটকিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে।এসময় ফরহাদসহ অন্যরা ক্ষমা চাইলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইশা মণি স্টোরের প্রোপাইটার ইসলাম মিয়া বলেন, ফরহাদুলসহ কয়েকজন দোকানে এসে ডিবি পরিচয় দিয়ে দোকানের ট্রেড লাইসেন্স দেখতে চায়।দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় আমার কাছে ১৫হাজার টাকা দাবি করেন।আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮হাজার টাকা নেয়।পরে স্থানীয়দের জানালে তারা নৌকা আটকিয়ে আমার টাকা উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি ইতোমধ্যে ইউএনও মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে।কথিত সাংবাদিক ফরহাদুলের কাছ থেকে প্রতিবন্ধী দোকানদার ইসলাম মিয়ার টাকা উদ্ধার করে মুঠোফোন চিত্র ধারণ করা হয়েছে।এনিয়ে আগামী উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করবো।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন,তাৎক্ষণিক ঘটনাটি আমি শুনেছি।অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত,বৃহস্পতিবার বেলকা খেয়াঘাট থেকে নৌকা যোগে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন কথিত সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সাংবাদিক পরিবার এর ব্যানারে কয়েকজন সাংবাদিক। ফরহাদুল ইসলামের সৌজন্যে এ আনন্দ ভ্রমণ অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে।ভ্রমণ যাত্রায় আরোও উপস্থিত ছিলেন রফিকুল ইসলাম,জুয়েল রানা,হযরত বেল্লাল,মোকছেদুল আল মামুন,জয়ন্ত সাহা যতন,নুর আলম সরকার,ফাহিম হাসান,আব্দুর রাজ্জাক প্রমূখ।
হারুন অর রশিদ রাজু
সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা
মোবাইল ০১৭৪০১৫৬২১৩