ডেস্ক রিপোর্টঃ-কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক সংবাদকর্মীকে হুমকি দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে জেলা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও গোয়েন্দা শাখার ওসি বজলার রহমান স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বিবৃতি গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করা হয়। তবে সেই বিবৃতিতে বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে সাংবাদিকের মোবাইল ফোনের ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ স্বীকার করলেও পুলিশ দাবি করেছে, ‘আমরা মিডিয়াকে আঘাত করে কোনো শব্দ উচ্চারণ করিনি।’
বিবৃতিতে পুলিশ দাবি করেছে, অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁস হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় ভিডিও ডিলিট করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ওই ‘তরুণের’ সাংবাদিক পরিচয় জানা ছিল না বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশের লিখিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লোকদের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পুলিশের একটি ‘চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় একজন অজ্ঞাত উৎসুক তরুণ গোপন অভিযানের ভিডিও ধারণ শুরু করে। ওই তরুণ নাম-পরিচয় না দিয়েই ভিডিও ধারণ করতে থাকে। অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁস হতে পারে আশঙ্কা করে তার মোবাইল ফোন থেকে ভিডিওটি ডিলিট করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক সংবাদকর্মীকে হুমকি দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে জেলা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও গোয়েন্দা শাখার ওসি বজলার রহমান স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বিবৃতি গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করা হয়। তবে সেই বিবৃতিতে বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে সাংবাদিকের মোবাইল ফোনের ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ স্বীকার করলেও পুলিশ দাবি করেছে, ‘আমরা মিডিয়াকে আঘাত করে কোনো শব্দ উচ্চারণ করিনি।’
বিবৃতিতে পুলিশ দাবি করেছে, অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁস হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় ভিডিও ডিলিট করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।এছাড়া ওই ‘তরুণের’ সাংবাদিক পরিচয় জানা ছিল না বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশের লিখিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে,কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লোকদের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পুলিশের একটি ‘চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় একজন অজ্ঞাত উৎসুক তরুণ গোপন অভিযানের ভিডিও ধারণ শুরু করে।ওই তরুণ নাম-পরিচয় না দিয়েই ভিডিও ধারণ করতে থাকে।অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁস হতে পারে আশঙ্কা করে তার মোবাইল ফোন থেকে ভিডিওটি ডিলিট করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে পুলিশ আরও দাবি করেছে,ওই সাংবাদিকের পরিচয় আমাদের জানা ছিল না।পুলিশ ও মিডিয়া পরস্পর বন্ধু,আমরা মিডিয়াকে আঘাত করে কোনো শব্দ উচ্চারণ করিনি।একটা নির্জলা মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে।আমরা পরে তার পরিচয় জানতে পেরে শনিবার সাংবাদিক ভাইদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় তাঁকে (ভুক্তভোগী সাংবাদিককে) আমন্ত্রণ জানিয়েছি।
বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়েছে,ইতিমধ্যে বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভুলভাবে প্রকাশ করায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।তাই সকল সংবাদকর্মী ভাইদের সত্য ঘটনা প্রকাশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সেসব প্রতিবেদনকে ‘ভুলভাবে প্রকাশ’ বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বিবৃতির সপক্ষে কোনো প্রমাণ পুলিশ দিতে পারেনি।বিবৃতিতে উল্লেখ করা বেশ কিছু দাবির বিষয়ে খোঁজ নিয়েছে আজকের পত্রিকা।তাতে বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে চিলমারীর বিবাদমান এলাকায় ‘অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযানের’ দাবি করলেও অস্ত্র উদ্ধারের কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি।এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অল্প সময় পর ফিরে আসেন।রাতে সেখানে কোনো অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।আর যেখানে দিনের বেলা সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে হয়েছিল, সেখানে রাতের বেলা পুলিশ একক ভাবে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করার দাবি করায় এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সুপারের ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সেখানে থাকা রমনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা বলেন,পুলিশ সুপার এসে ইউনিয়নের দুই থানার মোড় ও সুন্দরগঞ্জের শহর মোড় সীমান্তে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।কিন্তু সে সময় কোনো অভিযান পরিচালনা হয়নি।আমি সেখানেই ছিলাম। কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতেও দেখিনি।পরে এমন কোনো সংবাদও পাইনি।
বিবৃতিতে পুলিশ দাবি করেছে,তারা সাংবাদিকের পরিচয় জানতেন না।কিন্তু ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম দাবি করেছেন, ‘আমি ভিডিও ধারণ করছিলাম। পুলিশ সুপার আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই তুমি কে?’ আমি নিজেকে মিডিয়াকর্মী পরিচয় দিই।সঙ্গে সঙ্গে এসপি ক্ষেপে যান।তার গানম্যানকে বলেন ‘ওর মোবাইল কেড়ে নাও।মিডিয়া ছুটায় দেব, চেনো আমাদের!’ এরপর তার গানম্যান আমার মোবাইল নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেন।
বিবৃতিতে সাংবাদিকের পরিচয় না জানা এবং ভিডিও ডিলিট করার ‘পরামর্শ’ দেওয়া প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাদ্দাম বলেন, ‘আমি আগে নিজের পরিচয় দিয়েছি।তারা আমাকে বললে ভিডিও করতাম না।কিন্তু পরিচয় দেওয়ার পরও এসপির নির্দেশে তার গানম্যান মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দিয়ে ফোন ফেরত দিয়েছেন।আমার পরিচয় না জানা নিয়ে পুলিশের দাবি সঠিক নয়।
সাদ্দাম আরও বলেন বলেন,বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ করা হলে শুক্রবার রাতে এসপির গানম্যান ফোন করে ভুল স্বীকার করেছেন।তিনি এসপির বরাতে তার দপ্তরে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন।কিন্তু আমি যাব কি না,তা ঠিক করিনি।