বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের তোপের মুখে বিদ্যালয় থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মুক্তার।মঙ্গলবার (৬ জুন)বেলা ১১টায় সহপাঠীর বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও আত্মহত্যা চেষ্টার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।জানা গেছে, গত ২৩ মে মঙ্গলবার পাঁচপীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী স্থানীয় এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য একটি নির্মাণাধীন ভবনের নীচে সুয়ে ছিল সামিরা আর পাশে বসে ছিল মনিকা নামের ভুক্তভোগী ছাত্রী। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিকা এবং সামিরাকে বিদ্যালয়ে আসতে বলে এবং শুধুমাত্র মনিকার অভিভাবককে আসতে বলেন। মনিকাকে স্কুল থেকে চলে যেতেও বলেন।গত ১ জুন বৃহস্পতিবার মনিকার ফুফা হিরা,ফুফু মুনজিলা ও দাদিকে নিয়ে জোরপূর্বক মীমাংসা করানো হয়।এতে সন্তুষ্ট ছিল না ছাত্রী মনিকা।গত ৫ জুন বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে চিরকুট লিখে টয়লেটে গিয়ে নিদ্রার (ঘুমের) ট্যাবলেট সেবন করে।পরে কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে ৬ জুন (মঙ্গলবার)বাড়ি ফিরে ছাত্রী মনিকা। ওই দিন বেলা ১১টায় সহপাঠীর বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও আত্মহত্যা চেষ্টার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের তোপের মুখে বিদ্যালয় থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মুক্তার।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান,আমাদের বান্ধবীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। সে কারনেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।ওই দিন দোষ করলে দুইছাত্রীর অভিভাবককে ডাকা হলো না কেন? সামিরা শিক্ষকের মেয়ে সেকারণে কিছু বলল না,আর মনিকা গরীব ঘরের মেয়ে এজন্য তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। আমরা মিজানুর স্যারের বিচার চাই।’স্থানীয়দের আব্দুল হান্নান,আব্দুল মালেক ও মুক্তার জানিয়েছেন, ‘আমরা এই স্যারের বহিষ্কার চাই।তার কারণে এই বিদ্যালয়ের এবং এলাকাবাসীর সম্মানহানী হয়েছে। একজন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিল।’
মনিকা জানায়,আমি সুষ্ঠ বিচার পেয়েছি।আমি চাই মিজানুর স্যারকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হোক।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেন জানান,মনিকা আক্তার নামের এক ছাত্রী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মৌখিক অভিযোগ করেছিল।পরে আমরা বিদ্যালয়ে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করি।অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।আজ শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করা মাত্র বিদ্যালয় থেকে দ্রুত চলে যান অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান।তিনি আরোও জানান, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের অভিযোগের সত্যতা এবং আজ পলায়নের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক একেএম ফজলে রাব্বি।জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।