নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানাধীন দক্ষিণ নলামারা সাকিনের শিমুল মিনা এর সেজো মেয়ে মুন্নি খানমের প্রায় ১৪ মাস পূর্বে খুলনা জেলার তেরখাদা থানাধীন হৃদয় ফকিরের সাথে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পারিবারিকভবে বিবাহ হয়।
গত ২৯/৮/২০২৫ খ্রিঃ বিকাল অনুমান ১৬.০০ ঘটিকার সময় মুন্নি খানম শ্বশুর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং ঐদিনই তার শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সে আর শ্বশুর বাড়িতে যায়নি।একই দিন রাত্র অনুমান ২১.০০ ঘটিকার পর হতে মুন্নি খানমকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজা খুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে।
পরর্তীতে নড়াগাতী থানা পুলিশ গত ০২/০৯/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুঃ ১০:০০ ঘটিকার সময় নড়াগাতী থানাধীন দক্ষিণ নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে পরিত্যাক্ত পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোণে পানির মধ্য হতে একজন অজ্ঞাতনামা মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
সংবাদ পেয়ে মুন্নি খানমের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উক্ত মৃতদেহ তাদের মেয়ের মর্মে সনাক্ত করে।নড়াগাতী থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ময়না তদন্ত করার নিমিত্তে মৃতদেহ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল, নড়াইল মর্গে প্রেরণ করেন।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে পিবিআই যশোর জেলা ছায়া তদন্ত অব্যহত রাখে।ছায়া তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পিবিআই প্রধান জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল,অ্যাডিশনাল আইজিপি,বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়,পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন,পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্ত্বে পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ) মোঃ সাইদুর রহমান পিপিএম-সেবা,এসআই(নিঃ) আলমগীর সহ পিবিআই,যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত ০৩/০৯/২০২৫ খ্রিঃ পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে আসামী মোঃ সোহেল সরদার(২০),পিং-মোঃ সামাদ সরদার,সাং-ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়া,থানা-নড়াগাতী, জেলা-নড়াইলকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মশিউর সরদারের মেস হতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীর দেখানো ও দেয়া তথ্য মতে ভিকটিমের গলায় থাকা স্বর্ণের লুন্ঠিত চেইনটি আসামীর নিজ বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,মুন্নি খানমের সাথে আসামী সোহেল সরদার (২০) এর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৯/০৮/২০২৫ খ্রিঃ ভিকটিম শ্বশর বাড়ি থেকে তার পিতার বাড়িতে আসে এবং প্রেমের টানে তারা ঐদিনই রাত অনুমান ৯.৩০ ঘটিকার সময় নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে একে অপরের সাথে দেখা করে।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে আসামী ভিকটিমকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে মৃতদেহ ফেলে চলে যায়।যাওয়ার সময় ভিকটিমের গলায় থাকা চেইন নিয়ে যায়।আসামী বাড়ীতে যাওয়ার পরে উক্ত চেইনটি ইমিটেশন মনে করে নিজ বাড়ীর পিছনে বাঁশবাগানে ফেলে দেয় মর্মে স্বীকার করে।ধৃত সোহেল সরদারকে অদ্য ০৪/০৯/২০২৫ খ্রিঃ যথাসময়ে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০৩/০৯/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।মামলাটির তদন্তভার পিবিআই,যশোর জেলা স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করে।