নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পাচুড়িয়া গ্রামে পোস্ট অফিসে পিয়ন পদে গত ৬/১২/২০২২ তারিখে সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।জানা যায় নড়াইল জেলা পোস্ট অফিস কার্যালয়ে ৪জন প্রার্থীর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ৪জনের মধ্যে যে প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন, তার এস এস সি পাশ সার্টিফিকেট জাল বলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে এবং অন্য প্রার্থীদের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নিয়োগের প্রার্থী পাঁচুড়িয়া গ্রামের সরোয়ার লস্করের ছেলে গোলাম মোস্তফা লস্কর বলেন মারুফ আমাদের গ্রামের স্কুলে কোনদিন পড়েন নাই,আমরা যখন জানতে পেরেছি সে আমাদের স্কুলের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরিতে যাচ্ছে তখন মৌখিকভাবে আমাদের গ্রামের পোস্টমাস্টারকে বিষয়টি জানিয়েছি যে মারুফের সার্টিফিকেট জাল। তখন পোস্টমাস্টার আমাদের জানিয়েছেন নিয়োগ সঠিকভাবে হবে তোমরা ঝামেলা করে না।
আরেক নিয়োগ প্রার্থী পাঁচুড়িয়া গ্রামের মোঃ সফি খান এর ছেলে খান দেলোয়ার হোসেন জিহাদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি প্রথমেই বিষয়টা বুঝতে পেরে পোস্টমাস্টারকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি,তারপরে দেখি যে ও দুর্নীতির সাথে পোস্টমাস্টার জড়িত আছে তখন আমি অনুলিপি প্রেরন করেছি ১|ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল, ২|জেলা প্রশাসক নড়াইল, ৩|উপবিভাগীয় পোস্ট অফিস পরিদর্শক,৪|লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আমি আশা করি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সঠিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পোস্ট অফিসের পিয়ন পাঁচুড়িয়া গ্রামের মোঃ তৈবুর রহমান ভূঁইয়ার ছেলে মারুফ আলম ভূইয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি পাচুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে গত ২০০৩ সালে এস এস সি পাশ করেছি। এবং আমি জিপিএ ৩,৩২ পেয়ে পাশ করেছি। সেটাও নাকী প্রাইভেট ভাবে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি এবং সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে অনিহা প্রকাশ করে বলেন অফিসে সঠিকভাবে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এবং বিভিন্ন তালবাহানা করে এড়িয়ে যায়। এবং সাংবাদিক আজিজুর বিশ্বাস কে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য এবং সমাজসেবক ও পাচুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধারে ২৫ বছরের সভাপতি শামসুল আলম কচির সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমার জানা মতে মারুফ আলম পাচুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোন দিনই পড়ালেখা করেন নাই এবং সে এসএসসি পাশ না।ইতিমধ্যে আমি এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছি।বিষয়টি তদন্ত করলে সত্যতা বের হয়ে আসবে।মারুফ আলম এর বিষয়ে তার চাচির সাথে কথা হলে তিনি বলেন,মারুফ আলম এর বাবা চাকুরী করতেন পরিবার নিয়ে এলাকার বাহিরে ছিলেন,মারুফ আলম কালিয়া,ও অন্য জায়গায় পড়ালেখা করেছে।সে লোহাগড়া বা পাঁচুড়িয়া স্কুলে কোথাও পড়া লেখা করেন নাই।
এঘটনার বিষয়ে পাচুড়িয়ার পোস্ট মাস্টার মোঃ আবুল খায়ের লস্কারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিধি মোতাবেক মারুফের চাকরি হয়েছে সে আমার আন্ডারে চাকুরি করবে আর আপনারা সার্টিফিকেট এর বিষয় বলছেন সেটা আমার দেখার দায়িত্ব না জেলার দায়িত্ব যে আছেন সেটা তিনি দেখবেন।
সাংবাদিকরা অনুসন্ধানে গিয়ে পাচুড়িয়া গ্ৰামের কিছু মানুষের কাছে মারুফ আলম এর এসএসসি পাসের কথা জানতে চাইলে সবাই হাসি ঠাট্টা করে এড়িয়ে যায়। এবং অনেকেই বলেছেন সে কোনদিন পড়ালেখায় করেন নাই তো এসএসসি পাস করে কিভাবে।
পাচুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়,সে ওই স্কুলের ছাত্র ছিলেন না এবং ওই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মুন্সি মাহবুবুর রহমান বলেন আমার জানা মতে সে অত্র স্কুলের ছাত্র ছিলেন না এবং আমাদের স্কুলে সে পরীক্ষার্থী ছিলেন না।এ সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারা জানাই মারুফ ওই জাল সার্টিফিকেট পেলো কোথায়?তদন্ত সাপেক্ষে নিয়োগ পত্র বাতিল করে মারুফ আলম এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এবিষয়ে যশোর বিভাগের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মিরাজুল হক এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন সার্কুলার অনুযায়ী নিয়োগ হতে হবে উক্ত সার্কুলারে যেটা উল্লেখ থাকবে সেই অনুযায়ী নিয়োগ হবে,এছাড়া দুর্নীতি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
মোঃ আজিজুর বিশ্বাস,স্টাফ রিপোর্টার।
মোবাইল ০১৯২০২৮১৭৮৭ /০১৭০৫১৯৩০৩০