ভোলায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাব দ্রুত পাশ করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে যুব গ্রুপ,মা-সংসদ,দরিদ্র জনগোষ্টিী, সাংবাদিক,সুশীল সমাজ এবং ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পূওর (ডরপ)।
শনিবার(২২ অক্টোবর-২০২২) সকাল ১১টায় ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন,সাপ্তাহিক দীপবাণী পত্রিকার সম্পাদক মো: আবু তাহের,শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসার মো: রুহুল আমীন জাহাঙ্গী,দৈনিক আজকের ভোলার সস্পাদক আলহাজ্ব মো: শওকত হোসেন, ভোলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর ও আর টিভির জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ রায় অপুসহ যুব গ্রুপ সদস্য এবং মা-সংসদ সদস্য।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুব সদস্য মো: আনোয়ার হোসেন।আরো উপস্থিত ছিল ইলেকট্রিক এন্ড প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিকবৃন্দ,সুশীল সমাজ,যুব গ্রুপ সদস্য,ডরপ প্রতিনিধি ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,তামাক ব্যবহার জনিত স্বাস্থ্য ক্ষতি থেকে সাধারণ জনগণকে রক্ষা করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন এবং সংশোধন করা হয়।কিন্তু আইনটি প্রণয়ন ও সংশোধনের পরেও সেখানে বেশ কয়েকটি ফাঁক-ফোকর রয়ে যায় যা তামাক কোম্পানি গুলোর ব্যবসায়িক কুট-কৌশল প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সহায়ক ছিল।দেরিতে হলেও প্রায় ৯ বছর পর আবার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী এবং সময়োপযোগী করণের লক্ষ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তাব প্রস্তুত ওয়েব সাইটে প্রকাশ এবং জনমত গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের এই সংশোধনী খসড়ার বিশাল জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তামাক কোম্পানিগুলো ভুয়া জনমত সংগ্রহ করাসহ গণমাধ্যম ব্যবহার করে নানাবিধ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। বক্তারা আরও বলেন,তামাক কোম্পানি গুলো ভালো করেই জানে তামাক নিয়ন্ত্রণের এই খসড়া সংশোধনী প্রস্তাব মূল আইনের ধারায় যুক্ত হলে জন সাধারণের মাঝে তামাক ব্যবহারের হার কমে যাবে। আর হার কমে যাওয়া মানে তামাক কোম্পানির ভোক্তা কমে যাওয়া এবং তাদের ব্যবসায় ভাটা পড়া।তাই তামাক কোম্পানি গুলো শুধু মাত্র তাদের ব্যবসায়িক মুনাফার লক্ষ্যে জনস্বার্থকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে বাঁধা গ্রস্ত করতে চাচ্ছে।অথচ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর দেশে তামাক ব্যবহার জনিত বিভিন্ন রোগে মৃত্যু বরণ করে প্রায় ১লাখ ৬১হাজার মানুষ। এছাড়াও তামাক ব্যবহার জনিত মৃত্যু ও অসুস্থতার কারণে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ সরকারের বছরে প্রায় ৩০হাজার ৫৬০কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয় যা তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয় থেকে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি।মানববন্ধনে আরো উল্লেখ করা হয়।আমরা সকল তামাক বিরোধী সংগঠন তামাক কোম্পানির এই অনৈতিক কর্ম কাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং নীতি-নির্ধারকদের কাছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাবনা দ্রুত পাস করার দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো-বিক্রয় স্থলে সকল ধরনের তামাক জাত দ্রব্য বা উহার মোড়ক বা প্যাকেট দৃষ্টির আড়ালে রাখা, তামাক জাত দ্রব্যের উৎপাদন কারী ও ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির সরাসরি বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজিক দায় বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ নিষিদ্ধ করা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলা ধূলার স্থান, ইত্যাদির সীমানার মধ্যে তামাক ও তামাক জাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা।সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা,সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সকল পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং তামাক জাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্ক বার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা ইত্যাদি।
আশিকুর রহমান শান্ত-ভোলা প্রতিনিধি।