বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্তব্ধ করার জন্য। কারণ বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই করেননি, এদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনেক যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিদেশী শক্তির হাত থেকে দেশের সকল সম্পদ উদ্ধার করার পাশাপাশি তিনি এদেশে সকল বিদেশী শোষণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দেশের অর্থনীতির শক্ত ভিত তৈরী করে দিয়েছেন। ঠিক একই ভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে আবার থামাতে চায় দেশি বিদেশি কিছু ষড়যন্ত্রকারীরা। কারণ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে। বাংলাদেশ বিরোধী গোষ্ঠি বাংলাদেশকে যেকোনো মূল্যে স্তব্ধ করতে চায়। তাদের ধারণা, শেখ হাসিনাকে হত্যা করা ছাড়া তারা বাংলাদেশকে থামাতে পারবে না।
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা কর্তৃক আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভার বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, বিংশ শতাব্দীতে বঙ্গবন্ধুই একমাত্র জাতীয়তাবাদী নেতা যিনি বিশ্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। গত চার দশকে বাংলাদেশে যে শিল্পায়ন আর অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, তার মূল চালিকা শক্তি ছিল জাতির পিতার রেখে যাওয়া প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ। বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা আনেননি, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবটুকুই করেছেন মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে। জাতির পিতার সরকারের মাথাপিছু আয় (২৭৮ ডলার) সমকালীন সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ ছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার অর্জিত মাথাপিছু আয় তৎকালীন সময়ে চীনের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে ১০০ ডলার বেশী ছিল।
ড. সেলিম বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গমাতার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কালজয়ী নারী নেত্রী এলিনর রুজেভেল্টের জীবনের অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। তবে একটি ক্ষেত্রে অমিল রয়েছে। বঙ্গমাতার সৌভাগ্য হয়েছে, তাঁর নিজের দেশের স্বাধীনতা অর্জনে সরাসরি ভূমিকা রাখার। কিন্তু এলিনর রুজেভেল্টের সেই সৌভাগ্য হয়নি।
বঙ্গবন্ধুকে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের একক নেতা হিসেবে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি একটু আপোষ করলে ইতিহাস অন্য রকমের হতো। নিজের জীবনকে ঝুকিপূর্ণ ও তুচ্ছ করে দিয়ে তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য কাজ করেছেন। পঁচাত্তরে ঘাতকরা তাকেও হত্যা করেছিল বত্রিশ নাম্বারের বাড়িতে, যে বাড়িতেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যেমন বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গমাতাও বাঙালির সার্বজনীন মাতা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত এই স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি জসিম উদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন কবি জসিম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন খলিফা। সভা সঞ্চালনা করেন কবি জসিম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান।