লক্ষ্মীপুর জেলাতে যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।এতে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।বৃহস্পতিবার ২৭ এপ্রিল রাত ১টার দিকে নিহত নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন। এতে কাশেম জিহাদীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।কাশেম জিহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি নিজের নামে বাহিনী গঠন করে এলাকায় প্রায় দুই যুগ ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয়ভাবে তিনি সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান হিসেবে পরিচিত।এই দিকে ঘটনার পর থেকেই আবুল কাশেম জিহাদীকে এলাকায় দেখা যায়নি।তার মোবাইলফোনে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।স্থানীয়দের দাবি,জিহাদী আত্মগোপনে রয়েছে।জিহাদীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ২৫ এপ্রিল রাত পৌনে ১০ টার দিকে সদর উপজেলার ৭নং বশিকপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট এলাকায় সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে গুলি করে হত্যা করে।এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।মাথায় ও মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা মারা গেছেন বলে জানান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ারে হোসেন।ঘটনার ২৭ ঘণ্টা পর আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম জিহাদীসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।নিহত নোমান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।তিনি (নোমান) প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।অপর নিহত রাকিব বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা-একই ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের রফিক উল্যার ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।বুধবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে তাদের মরদেহ স্ব স্ব পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।মামলার বাদী মাহফুজুর রহমান বলেন, নোমানকে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে কাশেম জিহাদী আমাকে হুমকি দিয়েছিল।এ জিহাদীই পরিকল্পিতভাবে নোমান ও রাকিবকে হত্যা করেছে। ৯৬ সালের পর থেকে বশিকপুরে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সবগুলো এই জিহাদীই ঘটিয়েছে।আমি এই হত্যার বিচার চাই।সুষ্ঠু বিচার পেতে আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, নোমান ও রাকিব হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।এতে ১৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ১৪-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে।আসামিরা যেখানেই থাকুক না কেন,আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।