ভোলা শহরে লিয়াকত আলী নামক এক ব্যাক্তি ও তার স্বশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুপনা,নিপীড়ন আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড’র অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন,নাসিরুদ্দিন লিটন নামের সাবেক এক সেনা সদস্য।শুক্রবার(১৪ এপ্রিল)সকালে শহরের ওয়েস্টার্ন পাড়া এলাকায় তার বাক্তিগত অফিসে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,আমি লিয়াকত আলী গংদের কাছ থেকে বিগত ২০০৩ সালের ৯ই মার্চ ৬শতাংশ জমি আমার স্ত্রী তাছলিমা মাহমুদ রেখা’র নামে ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বসবাস করে আসছি (যারমৌজা-চরনোয়াবাদ,জেএল নং ৫৯ হাল দাগ নং২০৬ জমাখারিজ খতিয়ান নং ১৮৭৭ এসএ খতিয়ান নং ২০৩৩ ডিপি খতিয়ান নং১৩ ৯১ এবং দলিলল নং ১৬২৬)কিন্তু অতি দূ:খ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে-জমি কেনার পর থেকে অদ্য পর্যন্ত লিয়াকত আলী গংরা আমার ক্রয়কৃত জমির মধ্যে আড়াই শতাংশ ভূমি জবর দখল করে বসে আছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পৌরসভায় একাধিকবার শালিশীতে বসে সমাধানের উদ্যোগ নিলেও উক্ত লিয়াকত তার কোনো তোয়াক্কা না করে আমার পরিবারের উপর জলুম-নির্যাতন’র স্টীমরোলার চালাতে থাকে। দিনের পর দিন বছরের পর বছর লিয়াকতের নেতৃত্ব তার গুন্ডা বাহিনী আমাদের উপর নিপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।তার টার্গেট হচ্ছে- আমার পরিবারকে এখান থেকে উৎখাত করে বসতভিটা দখল করে নেয়া। তারই ধারাবাহিতায় গত ১০ এপ্রিল/২০২৩ইং সকাল অনুমান ৮ টার সময় লিয়াকতের নেতৃত্বে তার ভাই শমশের আলী,আইয়ুব আলী,কালু,খালেক,তহমমিনা ও শাহজাদীসহ ১০/১২ জনের সন্ত্রাসী আমার নব নির্মিতব্য পাকা বসত ভবনে হামলা চালায়।তারা আমার স্ত্রী-সন্তানকে মারধর করে।সন্ত্রাসী কালু আমার মেয়ের গলা থেকে ১ভরি ওজনের একটি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।এসকল ক্যাডাররা আমার বাসা নির্মানের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আব্দুল মান্নান,হুমায়ুন’সহ বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত ফুলা-নিলা জখম করে।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,সন্ত্রাসী নারী-পুরুষসহ এই লিয়াকত বাহিনীর সদস্যরা এতই ভয়ঙ্কর যে,সামান্য “পান থেকে চুন খসার মত” ছুতো সৃস্টি করেই এরা ধাড়ালো অস্ত্র নিয়ে যখন তখন রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। এদের অত্যাচারে এলাকার বাসিন্দারাও সবসময়ই ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন।ঘটনার দিন এরা আমার স্ত্রী-কন্যা ও কর্মরত শ্রমিককে বেধড়ক লাঠিপেটার পর ধাড়ালো ‘দা’ দিয়ে খুন করার চেষ্টা চালায়।এঘটনার পর আমি ভোলা সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে গিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেননি।উপরন্তু সেখানে এসে পুলিশ কর্মকর্তা অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের সাথে খোশালাপে ব্যাস্ত হয়ে পড়ার দৃশ্য দেখে আমরা রিতিমত হতবাক ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ি।এরপর আমি পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যালয়ে গিয়ে ঘটনার পূন:বিবরন পেশ করলে সেখানকার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে থানা পুলিশ দ্বিতীয়বারের মতো ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুল খালেক নামের অভিযুক্ত একজনকে আটক করে নিয়ে আসেন। ওইদিন বিকেলেই তাকে ছেড়ে দেন পুলিশ।আমি আইনী সহায়তা চেয়ে থানায় গিয়ে ফের দায়িত্বরত পুলিশ কর্তার দ্বারস্ত হলে তিনি আমাকে জমির কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেন এবং উভয়পক্ষের কাগজপত্র বুঝেন এমন দু’জন করে ব্যাক্তির নাম দিতে বলেন।পুলিশের কথামতো দু’জন ব্যাক্তির নাম দেয়া হলেও অদ্যবদি থানা পুলিশ আমাকে ডাকেননি।তিনি দূ:খ করে বলেন,আমার প্রশ্ন হচ্ছে,পুলিশের কাজ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। সন্ত্রাসী-অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তুু তার পরিবার পুলিশের কাছ থেকে সেরকম কোনো সহযোগীতা পাননি বলেও অভিযোগ তুলেন সাবেক এ সেনা সদস্য। তাই একজন আইনের সেবক ও সাবেক সেনা সদস্য হিসেবে তিনি এ বিষয়ে ভোলার পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক’সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহনীর কাছে বিশেষ অনুরোধ করেছেন,তারা যেনো এসকল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেন।তিনি লিয়াকত বাহিনীর কবল থেকে নিজ পরিবারকে রক্ষা ও নিরাপত্তা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।এদিকে এসব বিষয়ে অভিযুক্ত লিয়াকত আলী,শমশের ও খালেক মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সন্ত্রাস এবং ভূমিদস্যুপনার সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন।তবে সাবেক সেনা সদস্য নাসিরুদ্দিন মিয়ার জমি কেনো জোড়পূর্বক দখল করে আছেন,এমন প্রশ্নের কোনো সদূত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত লিয়াকত আলী মিয়া।বর্তমানে এসকল সন্ত্রাসীদের হামলা,নিপীড়ন আর অব্যহত জুলুমবাজীর ফলে ভূক্তভোগী এ পরিবারটি এখন চরম আতঙ্ক,উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।