ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা পৌরসভার নবগঠিত কমিটির আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শ্রমজীবী মানুষ ও সুশীল সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে শহরের বিএফজি রেস্টুরেন্টে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার ১১ এপ্রিল-২০২৩ইং ভোলা সদর উপজেলার বাংলা স্কুল মোড়ে অবস্থিত বিএফজি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের হল রুমে এ শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষদের নিয়ে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।ইফতারের আগ মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোঃ ওবায়েদুর রহমান বিন মোস্তফা,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তর শাখার সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজী,ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ভোলা পৌরসভা সভাপতি আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সবুজ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন,ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তর শাখার সেক্রেটারি মাওলানা তরিকুল ইসলাম তারেক,ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের ভোলা জেলা উত্তর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম পাটওয়ারী,উম্মে কুলসুম মহিলা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরীর।উক্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন,ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আর্কিটেক পারভেজ রানা,ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তর শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান আজাদী,ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম মোর্শেদ,ইকরা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোঃ ইসরাফিল আলম,ইসলামী আন্দোলন দপ্তর এর দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল সহ প্রায়শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার শ্রমজীবী মানুষ।সভায় বক্তারা পবিত্র মাহে রমজান মাসের গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন।তারা সঠ বলেন,স্বাধীনতার ৫০তম সুবর্ণ জয়ন্তী বার্ষিকীতে ন্যায্য পাওনা চাইতে গিয়ে বাঁশখালীতে গুলি খেয়ে জীবন দেয়ার মত ঘটনা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।বাঁশখালীতে শ্রমিকদের বেতন চাওয়ায় তাদের গুলি করে হত্যার মতো ঘটনা যেমন ঘটছে তেমনি জীবন যাত্রার ব্যয় পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধির পরেও দেশের চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদেরকে নামে মাত্র মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে।আমরা সিয়াম সাধনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জীবন গঠনে ইসলামী আন্দোলনের ছায়াতলে সমাবেত হওয়ার জন্য সকলকে বিশেষ ভাবে আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আতাউর রহমান মোমতাজি তার বক্তব্যে বলেন,আধুনিক পৃথিবীর রূপ-লাবণ্যতার পেছনে রয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কৃতিত্ব।নতুন নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার কারিগর মেহনতি শ্রমিকরা।আজ আক্ষেপের সাথে বলতে হয় সভ্যতার উদয় যে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত ঘামে রচিত হয় তারা আজ সর্বদা সমাজ রাষ্ট্রে উপেক্ষিত,অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত। কালের আবর্তনে তাই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য আন্দোলন।সেই ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের সংগ্রাম চালাচ্ছি এবং আগামী দিনেও অবিরাম চলবে।মাওলানা তরিকুল ইসলাম তারেক তার বক্তব্যে বলেন,শিকাগোর আন্দোলন শ্রম আন্দোলনের একটি ইতিহাস কিন্তু শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ(সাঃ)।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)তার জীবদ্দশায় দুনিয়াবাসীর সামনে এক চির শাশ্বত অনুপম শ্রমনীতি উপস্থাপন ও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)বলেছেন, শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বে তাদের প্রাপ্য মজুরী দিয়ে দাও।তিনি অন্যত্র বলেছেন,শ্রমিককে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ দিবে না,দিলে তাকে সে কাজে সহযোগিতা করো।তিনি আরো বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা যে ভাইকে তোমার অধীন করে দিয়েছেন তাকে তা-ই খেতে দাও,যা তুমি খাও।তাকে তাই পরিধান করতে দাও,যা তুমি পরিধান করো।শ্রমজীবী মানুষের প্রতি এই ইনসাফ পূর্ণনীতি শুধু সেই সময়ের জন্য নয়,বরং কেয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ।বক্তারা তাদের বক্তব্যে আরো বলেন,বাংলাদেশের সমাজে ইসলামী হুকুমাত বাস্তবায়নে সমাজ বান্ধব সকলকে এই কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। সমাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য,সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে ভুমিকা রাখার অনুরোধ জানান।আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও মুসলিম জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।