বামনডাঙ্গাতে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিশু নিকেতন এন্ড মডেল হাই স্কুল এক ধাপ এগিয়ে।গ্রামের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে ২০০১সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বামনডাঙ্গা শিশু নিকেতনএন্ড মডেল হাই স্কুল,৩৫ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে পথচলা শুরু হলেও বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১হাজারের উর্ধ্বে।
অধ্যক্ষ আবুল কাশেম প্রতিষ্ঠা করেন ভিন্ন ধরনের এই স্কুল।এরই মধ্যে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এই স্কুলটি।শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় সন্তোষ অবিভাবকরা।শুরুতেই গুরুত্ব দেওয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনার দিকে।এতে সাফল্যও এসেছে।প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।সদ্য প্রকাশিত এসএসসি-২২ পরিক্ষার ফলাফলে শতভাগ পাশ ও অংশগ্রহণকারী ৪৪জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫জন শিক্ষার্থী (জিপিএ-৫) পেয়েছে।।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্কুলটিকে।নিয়মিত শরীর চর্চা পাশাপশি ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বিজ্ঞান মেলা ও চিত্রাঙ্কন,বিতর্কসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।সাপ্তাহিক পরিক্ষা,মাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষা ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ।লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চার কারণে উপজেলার অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় স্কুলটি ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে।এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষারও ব্যবস্থা আছে স্কুলটিতে।প্রতিবছর উপজেলা পর্যায়ে কুচকাওয়াজ,বিজয় ডিসপ্লে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে ১ম ও ২য় স্থান অধিকার লাভ করে থাকেন।শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় মূখী করতে শ্রেণী কক্ষ ও দেওয়ালে কবি,পাঠ্য বইয়ের গল্পের দৃশ্য, বর্ণমালা, জাতীয় পতাকা,স্মৃতিসৌধ,শহীদ মিনার, ভাষা শহীদ বীর শ্রেষ্ঠদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে।মিনা-রাজুর স্কুলে যাওয়ার দৃশ্যও দেখার মতো।এসব সাফল্যর ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমিক শাখা চালুর মাধ্যমে নতুন রুপে বামনডাঙ্গা শিশু নিকেতন এন্ড মডেল হাই স্কুল নামে পরিচিত লাভ করে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলে নিয়মিত পড়াশোনা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতার কারণে প্রতিবছরই তারা ভালো রেজাল্ট করতে পারছে।সেই সঙ্গে সন্তানদের ধারবাহিক ফলাফলে অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট।বামনডাঙ্গা শিশু নিকেতন এন্ড মডেল হাইস্কুল এর স্বত্বাধিকারী ও চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কাশেম জানায়,শিক্ষার মান নিয়ে তিনি কখনো আপস করেননি।শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে ডিগ্রিধারী মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন।শিক্ষার্থীদের রয়েছে ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও লাইব্রেরি।তিনি আরো বলেন,অভিভাবকদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ করে থাকি।নিয়মিত শ্রেণি পরীক্ষা, শ্রেণি মনিটরিং এর ব্যবস্থা করেছি।সমগ্র পাঠ্য বই যাতে খুটি নাটি পড়ানো হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার ব্যবস্থা করেছি। নোট বই ও গাইড বইয়ে নির্ভরশীলতা কমিয়েছি। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের পাঠ ভালভাবে শিখল কিনা শিক্ষক তা শ্রেণিকক্ষেই নিশ্চিত করবেন সে ব্যবস্থা করেছি।পরিশেষে তিনি আরো বলেন,বর্তমানে আমাদের দেশের লেখাপড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে পাঠ্যবই মুখস্থ করা আর সার্টিফিকেটকেন্দ্রিক। এই ভুল জায়গা থেকে আমাদের সবাইকে সরে আসতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব ছেলেমেয়েদের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজে ফিরিয়ে আনতে হবে।জিপিএ-৫-এর পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করতে হবে।তাহলে অনেক প্রতিভাবান ও মেধাবী ছেলেমেয়ে বের হয়ে আসবে। না হলে জাতি ক্রমেই বিকলাঙ্গ হবে।
মোঃ হারুন অর রশিদ রাজু গাইবান্ধা জেলা
প্রতিনিধি-মোবাঃ-০১৭৪০১৫৬২১৩
তারিখ-১০ডিসেম্বর-২০২২ইং