বগুড়ার শাজাহানপুরে হাট-বাজারের ইজারা দরপত্র চুরির অভিযোগে উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।একই সাথে কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শণোর নোটিশও প্রেরণ করা হয়েছে।ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক।বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম জানান, গত ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে উপজেলার হাটবাজার সমুহের ১৪৩০ বঙ্গাব্দে ইজারা প্রদানের জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তী অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণের সময় উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের একটি দরপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে গোপনে চুরি করে বাহিরে পাঠিয়ে দেয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪)(খ)(ঘ) ধারা অনুযায়ী বগুড়া জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করেছেন।যেহেতু মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। সেহেতু ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের এই অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪)(খ)(ঘ) ধারার অপরাধ করায় তাকে ইউনিয়ন পরিষদের স্বীয় পদ থেকে সাময়িক ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে।এছাড়া একই তারিখে অপর একটি নোটিশে কেন তাকে চুড়ান্ত ভাবে অপসারণ করা হবে না তার জবাব চেয়ে পত্র প্রাপ্তীর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বগুড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭এপ্রিল) এই আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ইউএনও সাইদা খানম।উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ উপজেলা অডিটোরিয়ামে হাটবাজার সমুহের ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ইজারা প্রদানের জন্য প্রথম পর্যায়ের দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্তকরণের সময় মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুজ্জামান উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের একটি দরপত্র গোপনে চুরি করে বাহিরে পাঠিয়ে দেন।উদ্যেশ্য উপজেলার খরণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীনকে জামাদারপুকুর হাট পাইয়ে দিতে অপর দরপত্র দাতা জেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহ সভাপতি আলহাজ্ব শেখকে ম্যানেজ করতে না পেরে তার দরপত্র গায়েব করা।সবার সামনে দরপত্র চুরির বিষয়টি প্রকাশ হলে ইউএনও সাইদা খানম ইউপি চেয়ারম্যানকে আটকে রেখে দ্রুত দরপত্রটি ফেরৎ দিতে চাপ প্রয়োগ করেন।চাপের মুখে ইউপি নুরুজ্জামান মোবাইল ফোনে তার সহযোগীদেরকে দরপত্রটি ফেরৎ দিতে বললে তারা কৌশলে জেলা যুবলীগ নেতা আলহাজ্ব শেখের দরপত্র জমা না দিয়ে কাহালু উপজেলা চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান সুরুজের নামে একটি দরপত্র জমা দেন।এঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মোজাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামানকে এজাহারভুক্ত আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।