খরা ও অনাবৃষ্টিতে ফলন ভালো হলেও সোনালি আঁশ ঘরে তোলা নিয়ে চিন্তিত কৃষক। পানির অভাবে তারা পাট জাগ দিতে পারছেন না। অতিরিক্ত খরায় খেতে পাট শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকে পুকুর ভাড়া করে জাগ দিচ্ছেন। ফলে খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে আঁশের মানও। তাই ভালো ফলনেও হাসি নেই চাষিদের মুখে।
তারা বলেন, পানি স্বল্পতার কারণে আমরা পাট জাগ দিতে পারছি না। পাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্লুইস গেটগুলো খুলে দিলে পানি আসতো। অন্যের মেশিন থেকে পানি দিয়ে পাট ভেজানোয় অনেক টাকা লোকসান হচ্ছে।
চাষিরা আরো বলেন, পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছি না। জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। উপায় না পেয়ে কিছু পাট কেটে ডোবা-নালার নোংরা পানিতে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আবার বাড়তি টাকা খরচ করে পুকুর ভাড়া নিচ্ছে।
নড়াইল কৃষি বিভাগ জানায়, এ জেলায় ২২ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমিতে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪১০ বেল পাট উৎপাদনের সম্ভাবনা বয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০ হাজার ৯০৩ বেল পাট।
লোহাগড়া উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১১ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৮২ বেল পাট। কালিয়া উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২৫ বেল পাট।
কৃষিস্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীপক কুমার রায় বলেন, এ বছর পাট নিয়ে কৃষকরা মহা বিপদে আছেন। পাট কেটেই জমিতে আমনের চাষ করা হয়।তাই সময় মতো পাট কাটতে না পারলে আমন চাষ ব্যাহত হতে পারে।
এজন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি দেরি না করে অল্প পানিতেই পাট জাগ দিযে পাটের ওপরে পলিথিন বিছিয়ে মাটি ও বালির বস্তা এবং ভারি কোন জিনিস দিয়ে পাট পানির নিচে ডুবিয়ে দিতে হবে। এছাড়া কৃষকদের কোনো উপায় নেই।