গাইবান্ধাতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বার বার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দছিজল(৬২)নামে এক ভূক্তভোগী।তিনি উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে।বৃহস্পতিবার ১৮আগস্ট২০২২ইং দুপুরে সুন্দরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন বার-বার মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানী করা হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,আমারা পৈত্রিকমূলে ৭বিঘা ২শতাংশ জমি পাই,১৯৭৬সালে আমার বাবা আজিম উদ্দিন সকল সম্পত্তি আমার জেঠাতো ভাই মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল ওরফে পিচাশকে(৮০)বর্গা দিয়ে স্বপরিবারে ঢাকায় যায়। পরে ১৯৭৭সালে আমার বাবা আজিম উদ্দিন সেখানে মারা যান।বাবা বেচে থাকাকালিন সময়ে জলিল জমির ফসলের ভাগ দিতেন।এরপর ১৯৮৫ সালে আমরা দশ ভাই-বোন পৈত্রিক ভিটায় এসে জমি ফেরত চাইলে জলিল পিচাশ জমি কিনেছেন বলে জানান।এ অবস্থায় জমির দলিল দেখতে চাইলে তিনি হুমকিসহ মারধরের চেষ্টা চালালে আমরা নিরুপায় হয়ে ১৯৮৯সালে স্বপরিবারে আবারও ঢাকায় যাই।এই সুযোগে আমাদের বসত ভিটার ঘরসহ আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলে জলিল মিয়া হলুদ চাষসহ বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করে। বিষয়টি জানার পর আমরা ঢাকা থেকে আসলে আমাদেরকে পৈত্রিক ভিটায় উঠতে দেয়নি। এমতাবস্থায় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে থেকে জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালানোর একপর্যায়ে ২০২১ইং সালে ওই জমিতে থাকা আমার স্ত্রীসহ পাঁচজনের কবর সরাতে চাপ দেন জলিল পিচাশ।তখন উভয়ের পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংঙ্কা দেখা দিলে গ্রামবাসীর উদ্যোগে গত ২০২১ইং সালের ৩ অক্টোবর একটি শালিশ হয়। এতে জলিল কোন প্রকার কাগজ দেখাতে না পেরে এক মাসের সময় নিয়ে ছলচাতুরির মাধ্যমে ১২ই অক্টোবর ১৪৪/১৪৫ ধারায় বসত ভিটার ৭৫ শতাংশ জমির উপর গোপনে মামলা করেন।মামলার নথিপত্র তুলে দেখা যায় অন্যের জমির কাগজপত্র দিয়ে মামলা করেছে। পরে মামলার বিষয়টি সালিশী বৈঠকে জানানো হলে ৪ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ মিয়াসহ এলাকাবাসী জমি পরিমাপ করে বসত বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি বুঝে দেন।এরপর টিনের চালা উত্তোলন করলে সেই রাতেই প্রতিপক্ষ সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়।পরে আমরা বসতঘর নির্মাণ করতে গেলে পুলিশ গিয়ে তা ভেঙ্গে দেয়।বাধ্য হয়ে আমরা ১৬০ শতাংশ আবাদি জমি দখলে নিয়ে সরিষার আবাদ করি। এরপর ওই জমির ওপর ১৩ ডিসেম্বর আদালতে একটি নিষেধাজ্ঞা মামলা করেন জলিল পিচাশ।পরে জলিল পিচাশ আবারও চলতি বছরের ৮ই জানুয়ারি সমস্ত জমির ওপর ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় মামলা করেন।এছাড়া জমিতে লাগানো ধানের চারা উবরে ফেলার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীসহ প্রতিহত করে জলিল পিচাশসহ ১১জনকে ধরে থানা পুলিশে সোপর্দ করি।পরে উভয়পক্ষকে নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল থানার এসআই রাশেদ একটি সালিশী বৈঠক করেন।এতে জলিল পিচাশ কাগজপত্র দেখাতে না পারাও তিনি আমাদেরকে ধান কাটার অনুমতি দেয়।আমরা ধান কাটতে গেলে তারা আমাদেরকে মারপিট করলে আমিসহ চারজন গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। এঘটনায় চলতি বছরের ২মে থানায় একটি মামলা দায়ের করি।জলিল মিয়াও পাল্টা মামলা করেন।এছাড়া জলিল মিয়া গত ৪ আগস্ট ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় আরও একটি মামলা করেন।১৪আগস্ট ভাঙচুরের অভিযোগ এনেও মামলা করেন।জলিল পিচাশ বারংবার মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশী হয়রানী করায় আমরা পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জলিল পিচাশ,তার স্বজন ও পুলিশী হয়রানী থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।সংবাদ সম্মেলনে তার মেয়ে জাহানারা বেগম,জামাতা জাহেদুল ইসলাম ও ছোটবোন নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।
হারুন অর রশিদ রাজু-সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি।