গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ঘাট থেকে তিস্তা নদীর উপর দিয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০মিঠার দৈর্ঘ্যে সেতুটি নির্মানের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে।সেতু নির্মানের ব্যায় সুন্দরগঞ্জ অংশে ৫হাজার ২’শ কোটি ৫০লাখ টাকা।মুল সেতু নির্মানে ব্যয় ৩’শ ৬৭কোটি ৫৮লাখ টাকা।সড়ক নির্মান,নদী শাষন, সংযোগ সড়ক,বক্স কালভার্ট,৭টি ছোট ব্রীজ,৪০টি কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণে মোট ব্যয় ১৩৪কোটি ৫২লাখ টাকা। নদীর মুল ব্রীজের নির্মাণ করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না স্ট্রেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড বাস্তবায়নে এলজিইডি। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শামসুল আরেফিন খান জানান,সেতুতে পাইল বসানো হবে ২৯০টি এর মধ্যে ১’শ ৭৫টি বসানো সম্পন্ন হয়েছে। পিলার ৩০টির মধ্যে ১০টি,গার্ডার স্থাপন ১৫৫টি’র মধ্যে স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে ৫০টি,সেতুর নির্মানের কাজ ৪০ভাগ সম্পন্ন,২০২৩ সালের জুন মাস নাগাদ সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিস্তা সেতুর কাজ যা এখন দৃশ্যমান।
এছাড়া গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর-সুন্দরগঞ্জ,চিলমারী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ হবে ৮৬কিলোমিটার।সেতুর কাজ শেষ হলে এটি রংপুর বিভাগের নদীপারের মানুষের যোগাযোগের পথ সুগম হবে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট,নীলফামারী ও রংপুর জেলার মানুষের।এবার এক সেতুতে ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে উত্তরের অবহেলিত ও দারিদ্র পিড়িত দুই জেলার মানুষের।তিস্তা নদীর বিভক্ত দুই জেলাবাসীর দীর্ঘদিনে প্রত্যাশার তিস্তা সেতু নির্মিত হলে শুধু সংযোগেই নয় খুলে যাবে কৃষি ব্যাবসা বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা দ্বার।
২৯,গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন,তিস্তা সেতু নির্মিত হলে রংপুর অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতির উন্নয়নের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার দারিদ্র পীড়িত মানুষ খুজে পাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ।সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সরকার লেবু বলেন, উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ও প্রত্যাশার এই তিস্তা সেতুনির্মান কাজ শেষ হলে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার যোগাযোগ উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য আসবে।কুড়িগ্রাম জেলার মানুষেরা ঢাকা যাতায়াতে অনেক পথ কমে আসবে।কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দুরত্ব কমে আসবে ১০০কিলোমিটার। কাশেম বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আজিজুল হক বলেন,০৩কিলোমিটার নদী শাষন করায় এই এলাকার পতিত জমি গুলো কৃষি কাজে ব্যবহার হবে এতে করে দরিদ্র কৃষকরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে।উজান বেচাগাড়ীর সোহেল মিয়া বলেন,হঠাৎ করে একজন অসুস্থ্য রোগীকে জরুরীভাবে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনা।কাঁধে করে বাড়ী থেকে নদীর ঘাট পর্যন্ত আনতে হয়,অনেক সময় নৌকা পেতে দেরী হয়,নৌকায় কারে ওপার পৌছার আগেই রোগী মারা যায়,এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসার জন্য এ সেতুটি অনেক কাজে আসবে বেঁচে যাবে অনেক মানুষের প্রাণ।
গণমাধ্যম কর্মী আতোয়ার রহমান রানা বলেন, তিস্তা সেতুর নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে এ এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসেলর ন্যায্য মুল্য পাবে।সেতু এলাকা থেকে সরাসরি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত ফসল পাঠানো সহজ হবে।হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম বলেন,আমাদের গাইবান্ধা জেলা শহরকে পকেট শহর বলে থাকি।এখন আর আমরা এ শহরকে পকেট শহর বলতে পারবো না কেননা সেতুর কাজ শেষ হলে গাইবান্ধার সঙ্গে অন্য জেলা ও উপজেলার নতুন সংযোগ স্থাপন হবে।সেতুর নির্মান কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেতুর দু’পাশে অসংখ্য দোকান পাট খাবার হোটেল ও রেষ্টুরেস্ট গড়ে উঠেছে।দাম বেরেছে জমির।দৃশ্যমান এ তিস্তা সেতু দেখতে প্রতিদিন নদীর দু’পারে আসছে উৎসাহী পর্যটক।