লালমনিরহাট জরুরী খাদ্য সহায়তা দিয়ে সম্মাননা পেলেন সম্মাননা সন্তান মোঃ শাহীনুর ইসলাম।জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ এর মাধ্যমে জরুরি সেবা দিয়ে সম্মাননা পেলেন লালমনিরহাট জেলার উদ্যোক্তা মোঃ শাহীনুর ইসলাম।
কোভিড-১৯ চলাকালীন সরকারের জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ এর মাধ্যমে জনগণকে সেবা দিয়ে সম্মাননা পেলেন লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মোঃ শাহীনুর ইসলাম।
করোনা অতিমারির কারণে সৃষ্ট জাতীয় সংকটে ৩৩৩ জাতীয় হেল্পলাইনের মাধ্যমে জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রদানে অনবদ্য অবদান রাখায় সারাদেশের ডিজিটাল সেন্টারের ১০০জন উদ্যোক্তাদের সম্মাননা প্রদান করেছে এটুআই। সারাদেশের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যটন নগরী কক্সবাজারের স্থানীয় একটি হোটেলে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত উদ্যোক্তা সম্মেলনে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক(যুগ্নসচিব)ড.দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব)মোঃ সাইফুল ইসলাম।
জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ এর মাধ্যমে দেশের সরকারি সেবার তথ্য ও সেবা তাৎক্ষণিকভাবে নাগরিকদের প্রদান করে আসছে।বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় এটুআই-এর উদ্যোগে লকডাউন পরিস্থিতিতে জনগণের ভোগান্তি লাঘবে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে টোলফ্রি নতুন নতুন উপসেবা যুক্ত করা হয়।
সংকটকালীন পরিস্থিতিতে কর্মহীন দরিদ্র নাগরিকদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদানে ৩৩৩ হেল্পলাইন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সারাদেশ থেকে আগত কলগুলো রিসিভ করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেন্টারের এই ১০০জন স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোক্তা সহযোগিতা করেন।মধ্যবিত্ত মানুষ তাদের কষ্টের কথা কারো কাছে বলতে পারে না বিধায় তারা ফোনের মাধ্যমে তাদের অসহায়ত্ত্বের কথা ৩৩৩ হেল্পলাইনে জানিয়েছেন এবং তাদের তথ্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছাই।
উল্লেখ্য,স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ বাস্তবায়নে এবং জনগণের হাতের মুঠোয় সরকারি-বেসরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত‘এটুআই’নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ডিজিটাল সেন্টার ও জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩ কে অধিকতর শক্তিশালী,টেকসই ও ব্যবসাবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা এবং নতুন নতুন সেবা সংযোজন করে এর পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘৩৩৩-এর বিজনেস মডেল’ তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে মোট ৮,৩৫০টি ডিজিটাল সেন্টারে ১৬,১০০জন উদ্যোক্তা সরকারি-বেসরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় সহজে,দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
জনগণের হাতের মুঠোয় সেবা প্রদানে ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা প্রদানের লক্ষ্যে ৩৩৩ জাতীয় হেল্পলাইনের সেচ্ছাসেবী উদ্যোক্তাদের জন্য আয়োজিত এই সম্মেলনে ৩৩৩ এর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচী, চলমান কর্মসূচী ও নাগরিক সেবায় ৩৩৩ এর ভূমিকা এবং ২০৪১সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এটুআই এর নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ এর সাথে ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি,৩৩৩-এর বিজনেস মডেল উন্নয়ন এবং বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ডিজিটাল সেন্টার সম্প্রসারণের বিষয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা আলোচনা করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো: মাজেদুল ইসলাম,সামাজিক উদ্ভাবন ও অপারেশন ক্লাস্টার প্রধান মানিক মাহমুদ, এইচডি মিডিয়া ম্যানেজার পূরবী মতিন,ই-গভর্নেন্স পলিসি এক্সপার্ট (সিনিয়র সহকারী সচিব) আল ইমরান রুহুল ইসলাম,ন্যাশনাল কনসালটেন্ট দিদার-ই-কিবরিয়া,ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট কোঅর্ডিনেটর অশোক কুমার বিশ্বাস,কমিউনিকেশন ও মিডিয়া আউটরীচ কনসালটেন্ট আদনান ফয়সল, ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ এবং ন্যাশনাল কনস্যালটেন্ট মো.কামাল হোসেইন, বাছাইকৃত ডিজিটাল সেন্টারের ১০০ জন উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
বুড়িমারী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মোঃ শাহীনুর ইসলাম সম্মাননা পেয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, এই মহৎ কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে পেরে গর্বিত মনে করেন। তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন,পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসন, বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও এটুআই কর্মকর্তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য,উদ্যোক্তা মোঃ শাহীনুর ইসলাম ২০১৮ সালে এটুআই এর আয়োজনে অর্থ বিভাগ অর্থ মন্ত্রনালয় কর্তৃৃক ই-চালান দেশসেরা ১ম স্থান অর্জন,২০২০ সালে ডিজিটাল সেন্টারের ১০বছর পূর্তিতে ই-সেবা ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে দেশসেরা উদ্যোক্তা ও ২০১৮ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা,২০১৮ সালে জেলা এম্বাসেডর নির্বাচিত হয়েছিলেন।