ভোলায় ভয়াল ১২ নভেম্বর ১৯৭০ স্বরণে সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক সমাবেশ-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।‘শোক থেকে শক্তি’ এই পতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে শনিবার(১২ ই নভেম্বর)সকালে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে সিপিপি,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসন যৌথ উদ্দোগে এক যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শিখা সরকার।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো: তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন,সিপিপি’র সদর দপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন)আহমেদুল হক,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিবেক সরকার,জেলা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহীম খলিল,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)মো: আসাদুজ্জামান,ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি এম. হাবিবুর রহমান,বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ তাহের,ভোলা পৌর সভার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন মিয়া,ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইউনুছ,জেলা রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, প্রমূখ।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঘূর্ণিঝড় কর্মসূচি (সিপিপি)পরিচালক (অপারেশন)মোঃ নূর ইসলাম খান অসি, সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি(সিপিপি)ভোলা জেলার উপ-পরিচালক মো: আব্দুর রশীদ।
এসময় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন,‘৭০এর ঘূর্ণিঝড়ের পরে উপকূলের বিপন্ন মানুষের পাশে ছিলেন তৎকালীন বাংলার গন মানুষের নেতা শেখ মজিবুর রহমান।ঘূর্নিঝড়ের একদিন পড়ে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারনা বন্ধ রেখে লঞ্চ যোগে ভোলা সহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে তাদের পাশে দাঁড়ান। স্থানীয় নেতৃবিন্দরদের সাথে নিয়ে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ত্রান বিতরন করেন।সকলকে ত্রান কার্যক্রম চালিয়ে রাখতে ও উদ্ধার কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।পরে ঢাকায় গিয়ে দেশি-বিদেশী মিডিয়ার সামনে তৎতকালীন পাকিস্তান সরকারর থেকে কোন প্রতিনিধি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু।
এসময় তিনি আরো বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ে ভোলাসহ উপকূলীয় জেলায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রান হারিয়েছে।কিন্তু তৎকালীন সরকার দুর্যোগ মোকাবেলায় তেমন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই দেশ স্বাধীনের পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে দেশে সিপিবি প্রতিষ্ঠা করেন। সিপিবি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা আজকে সারা বিশে^ প্রসংশিত। ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভোলায় একটি আর্কাইভ করার পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ্য করেন প্রধান অতিথি।
এসময় উপস্থিত অন্যান্য বক্তরা বলেন,তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অবহেলায় উপকূল জুড়ে মৃত্যুপুড়ীতে রুপ নিয়েছিলো।পাকিস্তান সরকার কোন সিগ্যানালের কথা যানায়নি মানুষকে। এমন কোন পরিবার তখন ছিলন যে মারা যায়নি। মনপুরায় তখন ২২ হাজার মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ হাজার মানুষ বেচেঁ ছিলো।তবে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দুর্যোগ রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহনের কারনে আজ মৃত্যুর সংখ্যা ১ ডিজিজে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান। আগামীতে উপকূলকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সুরক্ষা বেষ্টিনী করা হবে। যেন মানুষের দুর্যোগ সময়ে মানুষের ক্ষতি কম হয়।পরে প্রবীন সিপিপি’র ৬জন স্বেচ্ছাসেবকের মাঝে ক্রেস্ট, সনদ ও শুভেচ্ছা অর্থ প্রদান করেন অতিথিরা। এছাড়া মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সিপিবি’র বহুমাত্রিক দুর্যোগ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।