বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার খান মৎস্য ভান্ডার-৩ নামে একটি ট্রলার ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারে ২১ জন জেলে ছিল। তাদের মধ্যে দৌলতখান উপজেলার ১৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।এছাড়াও দুই জেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ভারতীয় কোষ্টগার্ড। এ তথ্য উদ্ধার হওয়াদের আত্মীয়স্বজন নিশ্চিত করেন।
জানা যায় গত ২১অক্টোবর শুক্রবার রাতে ভোলার চরফ্যাশন সামরাজ মাছঘাট থেকে ট্রলারটি মাছ ধরার উদ্দেশে ছেড়ে যায়,২৪ অক্টোবর রাতে জিপিএসের মাধ্যমে লোকেশনে দেখা যায় ট্রলারটি পাথর ঘাটায়।সেখান থেকে দক্ষিণ দিকে ছেড়ে যায়। এরপর থেকে কোন হদিস পাওয়া যায়নি ট্রলারে থাকা কারোই।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, সারাদেশে ইলিশ প্রজন্ম প্রজননের সময় ইলিশ ধরার ওপরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।সাগর ও নদীতে নিষেধাজ্ঞা ছিল।কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোলার চরফ্যাশন সামরাজ মাছঘাট ও বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে শতাধিক ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার জন্য যায়।ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়লে ট্রলারটি ডুবে যায়। তারপর থেকে তাঁদের কারো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত ২৮ অক্টোবর ভারতে উদ্ধার হওয়া মিরাজ মোবাইলের মাধ্যমে তাঁর মাকে জানায়,আমি ও নজির ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি।ঝড়ের কবলে পরে, আমাদের বোট মাঝখান দিয়ে ফেটে ডুবে যায়।এখানে কিভাবে আসছি তাও জানি না।তবে বাকিদেরকে অন্য বোটে উঠাতে দেখছি।এখান থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করেন।
ফিরোজের ছেলে আরিফ বলেন,আব্বার সাথে শুক্রবার রাত ১২টার সময় কথা হয়েছে।তখন আব্বা বলে,সাগরের উদ্দেশে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে যাইবো।তারপর থেকে আব্বার সাথে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মো. জাকির হোসেন বলেন, এই পর্যন্ত দৌলতখান থানায় ফিরোজসহ ১৩জনের নামে জিডি(সাধারণ ডায়েরি) করা হয়েছে।এদের মধ্যে চরপাতা ইউনিয়ন, চরখলিফা ইউনিয়ন,সৈয়দপুর ইউনিয়ন,ভবানীপুর ইউনিয়ন,পৌরসভায় বসবাস করেন এ জেলেরা । আমরা বিষয়টি কোষ্টগার্ডকে অবগত করব।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা ইমদাদুল্লাহ জানান,এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য আসেনি তবে আমি এখনই উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি
দৌলতখান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মু.মাহফুজুল হাসনাইন জানান,দৌলতখান থেকে ১৬ জন জেলে নিষেধাকে অপেক্ষা করে মাছ ধরতে নদীতে গিয়েছে।তবে তারা চরফ্যাশন উপজেলা থেকে সাগরে গিয়েছে।তবে এই ১৬ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত তারা বা তাদের পরিবারে কেউ আমার কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি বা কোন তথ্য জানাননি। তবে নিখোঁজ জেলেদের পরিবার যদি এ বিষয়ে আইনগত সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের পরিবারকে সকল বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো.মারুফ হোসেন মিনার জানান,তারা নিষেধাজ্ঞামা অমান্য করে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছে এই বিষয়ে তারা আমাদেরকে কিছুই জানায় নি এখন পর্যন্ত তাই এই বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই।তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।