নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসেও প্রতি মাসে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরকালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী।শুধু তাই নয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুর্নীতি ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি করে কমিটির সভাপতি ও অন্য সদস্যদের কে না জানিয়ে স্কুলে আসা সরকারের বিভিন্ন ফান্ড থেকে স্কুল উন্নয়নের অনুধানের টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে।গত সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ায় ও তার স্ত্রী ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় ঠিকমতো বিদ্যালয়ে না এসে বাইরে থেকে সরকারি দলের বিরুদ্ধে মিছিল মিটিং ও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অর্থের বিনিময়ে তদবির নিয়ে বেশি সময় ব্যস্ত থাকেন তিনি।শ্রেণিকক্ষে কখনও পাঠদান করেন না তিনি। একজন প্রধান শিক্ষকের এ রকম কর্মকাণ্ডে ফুঁসে উঠেছে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন।তাই এ নিয়ে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,তিনি ভেদুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পদে রয়েছেন।অপরদিকে,তার এসব অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার,জেলা শিক্ষা অফিসার,স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি।
স্কুল ছাত্রের অভিভাবক আকতার এর কাছে প্রধান শিক্ষকের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান,স্যার সবসময় অফিসের নাম করে বিভিন্ন কাজে কথা বলে বাইরে ব্যস্ত থাকেন।বাইরের কাজ সেরে মাঝে মধ্যে বিদ্যালয় আসেন।
স্কুলের ৫ম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান,স্কুলে কোন লেখাপড়া হয় না কোচিং না করলে স্যার মারধর করে।প্রধান শিক্ষক সময় মত কোন দিনই আসে না।এছাড়া তিনি কোনদিন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস ও নেন না।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশ্ররাফুল ইসলাম, স্থানীয় আলাউদ্দিন ও মোসাঃ জেসমিন সহ নাম প্রকাশ না করা শর্তে অনেক ই জানান, অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বিদ্যালয় না এসে সকল সুযোগ সুবিদা ভোগ করে প্রতিষ্ঠানটি কে তার ঘর বানিয়ে লুটে পুটে নিচ্ছেন এবং বিদ্যালয়ের বাহিরে বসে তিনি বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রাম ঠিক করেন এবং সরকারি চাকুরি করে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেন।
তারা আরো বলেন,সিরাজুল ইসলাম স্যার স্কুলের নামে সরকার থেকে বিভিন্ন উন্নয়নের নামে বরাদ্ধ আসলে কোন মিটিং না করে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে দীর্ঘ ২৭বছর তিনি উন্নয়নের নামে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বরাদ্ধের টাকা আত্মসাৎ করেন।স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক জানান,প্রধান শিক্ষক স্কুলে না এসে সহকারি শিক্ষকদের মাধ্যমে বাড়িতে হাজিরা খাতা নিয়ে স্বাক্ষর দেন।ওই অনুযায়ী স্কুলে প্রতিদিনই তার উপস্থিতি দেখা যায়।কিন্তু গত এক বছরের মধ্যে ২ মাসও স্কুলে আসে কিনা সন্দেহ আছে।তারা আরো বলেন,অনতিবিলম্বে প্রধান শিক্ষক এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ বাঁচানোর দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের কাছে মুঠোফোন বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উক্ত বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে জানান আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।