খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি তালিকায় চেয়ারম্যান মেম্বারের পছন্দের লোক?
নড়াইলের লোহাগড়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বল্প মূল্যে খাদ্য সহায়তা চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ডিজিটাল ডাটাবেজ ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে উপকার ভোগীদের ডাটাবেজ প্রণয়নের সঙ্গে তালিকা যাচাই করণ করা হবে।এতে তালিকায় আরও স্বচ্ছতা আসার পাশাপাশি অনিয়ম হ্রাস পাবে এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নীতিমালা বহির্ভূত কোন নাম তালিকায় থাকার সুযোগ থাকবে না।
সূত্রে জানা গেছে,এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির এক মিটিংয়ে কার্ডধারী মৃত এবং সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন করে প্রকৃত হতদরিদ্র,ভূমিহীন,কৃষি শ্রমিক,দিনমজুর, উপার্জনে অক্ষম এবং যে সব পরিবারে শিশু বা প্রতিবন্ধি রয়েছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটির মাধ্যমে সংশোধীত নতুন উপকার ভোগীদের তালিকা আহবান করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে,উপজেলা কমিটির এই সিন্ধান্তকে পুঁজি করে কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা নিজ দলের বাইরে থাকা অনেক হতদরিদ্রদের নাম বাতিলের প্রস্তাব করে একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন।
সেই নতুন তালিকায় দেখা যায় পূর্বের অনুমোদিত খাব্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় থাকা বেশিরভাগ দ্ররিদ্র পরিবারের পরিবর্তে চেয়ারম্যান মেম্বারদের পছন্দের লোক ঠাঁই পেয়েছে।দিনমজুর মো.আব্দুর রহিম,তাঁর বাড়ি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর শালনগর গ্রামে।তিনি বলেন,বর্তমান সরকার প্রধানের সহযোগিতায় ১০টাকার কার্ডের চাল ভোগ করে আসছি।কার্ড ডিজিটাল করার কথা শুনে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সেখানকার উদ্যাক্তা আমাকে ফিরিয়ে দেয়।এবং বলে আমার নাম এবার বাদ দেওয়া হয়েছে।একই গ্রামের বিধবা নুরুননাহার,ভুমিহীন জাপান,প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত কোবাদ মোল্যার কার্ডটি বাদ দিয়েছে। শালনগর ইউনিয়নের উদ্যাক্তা জিয়া ১০টাকার কার্ড অনলাইন করার জন্য প্রতি কার্ডে ৫০টাকা করে নিচ্ছে।
আগে থেকেই ১০টাকার চালের সুবিধাভোগী অসচ্ছল পরিবারের সদস্য নিরা বেগম,তাসলিমা,মশিয়ার,আবুল কালাম,আনজিরা,শাহাবুদ্দিন,মিজানসহ শালনগর ইউনিয়নের মোট ২৭৮জনের নাম বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।তাদের অভিযোগ,কোন কারন ছাড়াই কেন নাম বাতিল করা হচ্ছে?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩নং শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাবু মিয়া বলেন,আগের চেয়ারম্যানের সময়কালে ঢালাও ভাবে উপকার ভোগীদের নাম দেওয়া হয়েছিল।আমরা একটু সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।টাকা পয়সার ব্যাপারে বলেন ওদের তো খরচ আছে বিভিন্ন মালামাল কেনা লেগেছে তাই কি পরিমান নিচ্ছে আমি জানি না।
কোন রকম যাচাই বাছাই ছাড়া কেন নতুন ব্যক্তিদের নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে এবং নোটিশ ছাড়াই অনুমোদিত কার্ডধারী উপকার ভোগীদের নাম বাতিল করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্যসচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো.মান্নান আলী ছাপ জানিয়ে দেন এসব প্রশ্নের জবাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাই দিতে পারবেন।এর বাইরে কোন উত্তর আমার কাছে নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,লোহাগড়া উপজেলায় মোট কার্ডধারী উপকার ভোগীর সংখ্যা ১৫হাজার ৮৪১জন।যেখানে নোয়াগ্রাম ইউনিয়নে ১হাজার ৩৯০জনের মধ্যে ২৩৭জন,শালনগর ইউনিয়নে ১হাজার ৩৪৩জনের মধ্যে ২৭৮জন,লোহাগড়া ইউনিয়নে ৪৯২জনের মধ্যে ১৭৮জন,নলদী ইউনিয়নে ১হাজার ৯৭৪জনের মধ্যে ১৮৮জন, লক্ষীপাশা ইউনিয়নে ৮০৩জনের মধ্যে ৩২০জন, দীঘলিয়া ইউনিয়নে ১হাজার ৬৯৪জনের মধ্যে ১২জন এবং লাহুড়িয়া ইউনিয়নে ১হাজার ৮১৭জনের মধ্যে ৭৯২জনের নাম বাতিল করে নতুন নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সেই সংগে সমগ্র উপজেলার (১২ ইউনিয়নে) বানিজ্য হচ্ছে ১০লাখ২৯ হাজার টাকা।এবিষয়ে সাধারণ জনগন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মোঃ আজিজুর বিশ্বাস নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।
মোবাইল-০১৯২০২৮১৭৮৭ /০১৭০৫১৯৩০৩০