দেশের প্রথম ৬ লেনের কালনা সেতু উদ্ভোধন করা হবে সেপ্টেম্বর মাসে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পর এবার চালু হচ্ছে কালনা সেতু সামনের মাসে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এটা হবে বাংলাদেশের প্রথম ৬ লেনের সেতু। গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত কালনা সেতু।মূল সেতুর সব কাজ প্রায় শেষ।আগামী সেপ্টেম্বরের যেকোনো সময় এ সেতু উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তারা।কালনা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে খুলনা বিভাগের জেলা গুলোর বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তি ঘটবে।
দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর এ সেতুর অবস্থান। সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা ও পশ্চিম পাড়ে লোহাগড়া উপজেলা।প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে সেপ্টেম্বরের যেকোনো দিন উদ্বোধন হতে পারে। তবে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে উদ্বোধন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মো.আশরাফুজ্জামান আরও বলেন,এখন রোড মার্কিং ও পেইন্টিংয়ের কাজ চলছে।কাশিয়ানীর পাশে একটু ছোট্ট অংশের সংযোগ সড়কের কাজ বাকি ছিল, তা শেষ পর্যায়ে।গাড়ির জন্য আটটি ও মোটরসাইকেলের জন্য দুটি টোল প্লাজার লেন করা হচ্ছে। চারটি প্রস্তুত হয়েছে। এই চারটি দিয়েই গাড়ি চালানো যাবে।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘কালনা সেতু স্বশরীরে উদ্বোধনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। এখনও এ বিষয়ে দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।এক–দুই দিনের মধ্যে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) স্প্যানটি তৈরি হয়েছে ভিয়েতনামে।ওই স্প্যানের উভয় পাশের অন্য স্প্যানগুলো পিসি গার্ডারের (কংক্রিট)।এর সব কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর ওপরের শেষ মুহূর্তের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। প্রকৌশলীরা শেষ মুহূর্তের কাজগুলো পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে।
সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগসড়ক ৪ দশমিক ২৭৩কিলোমিটার, যার প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয় ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার।
২০১৮ সালের ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি হয়। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তখন থেকে ৩৬ মাস ছিল মেয়াদকাল। পরে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
এতে বেনাপোল ও যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার,খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে।
তথ্য চিত্রঃ-সাংবাদিক দেব প্রসাদ দাস-নড়াইল জেলা।