জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর) ও গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন,এই সরকার লুটপাটের প্রশ্রয় দেওয়ার সরকার।প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা আছে। তবে তার পাশের যে ব্যবসাতন্ত্র আছে, সেই ব্যবসায়ীক ধনিকতন্ত্ররা দেশটাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।শুক্রবার (২ডিসেম্বর) রাত ৯ টায় সুন্দরগঞ্জ ডিড রাইটার (ডি.ডব্লিউ) সরকারি কলেজ মাঠে সুন্দরগঞ্জ পৌর জাতীয় মহিলা পার্টি, জাতীয় ছাত্র সমাজ,জাতীয় যুব সংহতি ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুন্দরগঞ্জ পৌর জাপার সভাপতি পৌর মেয়র আব্দুর রশীদ রেজা সরকার ডাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি আরও বলেন,দেশ আজকে এক ক্রান্তিলগ্নে আছে।একটা দল ছিল।যারা ২০০৪ সালে বিদ্যুতের জন্য অনেকগুলো খাম্বা তৈরি করেছিলো।এই খাম্বার জন্য তখন হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে।আর এই সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করলো,খাম্বা তৈরি করলো না।সেই বিদ্যুৎগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জের জন্য ৮৯ হাজার কোটি টাকা সরকারকে ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। এসব জনগণের টাকা।এখনো বিশ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ বাকি আছে।এসমস্ত দায় যখন মিটানো হবে, তখন আমাদের কত রিজার্ভ থাকবে আমরা জানিনা।আমাদের শঙ্কা কাগজ কেনার টাকা থাকবে কি না।ওষুধ কেনার টাকা থাকবে কি না। কৃষি পণ্য কেনার টাকা থাকবেনা কি না।দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।আমরা অর্থমন্ত্রীকেও এসব নিয়ে কোন বক্তব্য দিতে দেখিনা। এ দেশে অর্থ মন্ত্রী আছে কিনা সেটাও আমাদের সন্দেহ হয়।আমরা অপেক্ষা করি দেশের অর্থনৈতিক সংকটে অর্থমন্ত্রী কি বলেন।শুনতে পেরেছি অর্থ মন্ত্রী নাকি অফিসেই করেন না। দেশ চলবে কিভাবে।জাতি চলবে কিভাবে।পরিত্রাণ হবে কিভাবে।জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে আসতে হবে।
এমপি শামীম আরও বলেন, জিএম কাদের দেশের স্বার্থে কথা বলেছিলেন। জনগণের স্বার্থে কথা বলেছিলেন।জিএম কাদের এদেশকে বাচঁানোর চেষ্টা করেছিলেন।ইনশাআল্লাহ জিএম কাদেরের নেতৃত্বে সামনে জাতীয় পার্টি বিশাল একটি শক্তিশালী দলে পরিণত হবে।ব্যারিস্টার শামীম আরও বলেন,খাদের কিনারে চলে যাচ্ছে দেশ। খাদের কিনারে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ।ভবিষ্যৎ খাদের কিনারে চলে যাচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। খাদের কিনারে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি।আমাদের ব্রিজ থাকবে। সেই ব্রিজে টোল দিয়ে যাওয়ার জন্য মানুষের হাতে অর্থ থাকবেনা।এই অবস্থা থেকে অর্থনীতির উত্তরণ ঘটাতে হবে।বিপ্লব করতে হবে। পরাধীন দেশে বিপ্লব হয় যুদ্ধের মাধ্যমে।জেলে যাওয়ার মাধ্যমে।স্বাধীন দেশে বিপ্লব হলো সঠিক ভোটের বিপ্লব।
সুন্দরগঞ্জের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে,তারা ভোট দিতে পারে। জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন,একটা সময় এই জনপদের মানুষকে হামলা মামলার শিকার হতে হয়েছিল। সেই সময় জেলে থাকতে হতো।গোয়াল ঘরে ঘুমাতে হতো।আমাকে নির্বাচিত করায় মানুষকে শান্তি দিতে পেরেছি। সুশাসন দিতে পেরেছি।আমি আপনাদের কথা সংসদে ধাপে ধাপে তুলে ধরে প্রমাণ করেছি সুন্দরগঞ্জের মূল সমস্যা হচ্ছে দারিদ্র্যতা।এরপর থেকেই সুন্দরগঞ্জের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে।তিস্তা ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলছে।আল্লাহর অশেষ রহমতে ২০২৪ সালের মধ্যেই ব্রীজের কাজ শেষ হবে।এই মুহূর্তে সুন্দরগঞ্জে দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।
পৌর কাউন্সিলর শাহিন প্রামাণিকের স ালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আনছার আলী সরদার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মন্ডল,বেলকা ইউনিয়ন জাপার সভাপতি রেজাউল ইসলাম রানা, উপজেলা মহিলা পার্টির সভাপতি আক্তার বানু ইতি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি সরোয়ার হোসেন বাবু, যুব সংহতির সভাপতি সাইদুর রহমান,ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহ্ সুলতান সরকার সুজন, অটোশ্রমিক পার্টির সভাপতি রিপন মিয়া,কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম,পৌর স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সদস্য সচিব খায়রুজ্জামান লিটন, পৌর ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সুমন মহন্ত প্রমূখ।
সম্মেলনে দ্বিতীয় পর্বে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি পৌর জাতীয় মহিলা পার্টি,ছাত্র সমাজ, জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। এতে পৌর জাতীয় মহিলা পার্টির সভাপতি আলেয়া বেগম,সাধারণ সম্পাদক মল্লিকা বেগম,সাংগঠনিক সম্পাদক মিনারা বেগম।পৌর ছাত্র সমাজের সভাপতি ড্যানিস সরকার, সাধারণ সম্পাদক ইমন সরকার,সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সরকার।পৌর যুব সংহতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকার,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ রয়েল।পৌর স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লেলিন সরকার,সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান লিটন,সাংগঠনিক সম্পাদক রিজু সরকার।পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
মোঃ হারুন অর রশিদ
সংবাদদাতা
সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা,
০১৭৪০১৫৬২১৩
০২-১২-২০২২ ইং