তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া দ্রুত চুড়ান্ত করার দাবি জানালেন ভোলার তরুণ সমাজ।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল এর বিশ্ব জনসংখ্যা চিত্র(২০২১)এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ২৭.৫% ভাগ (৪ কোটি ৫৪ লক্ষ) হলো কিশোর ও তরুণ(১০-২৪), অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের গ্লোবাল স্কুল বেইজড স্টুডেন্ট হেলথ সার্ভে(জিএসএসএইচ) অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১৩-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯.৮ শতাংশ এবং ১৬-১৭ বছর বয়সী তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৬শতাংশ বা প্রায় ৭২লক্ষ ৬৪ হাজার জন।সুতরাং দেশের এক চতুর্থাংশ এই যুব সম্পদকে তামাকের ভয়াল থাবা থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন।
এ লক্ষ্যে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমন্টে অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পূওর(ডরপ)এর অ্যাডভোকেসি অফিসার তরুণ কান্তি দাশ এর সঞ্চালনায় গত রবিবার,২৮আগস্ট, ২০২২ ভোলা সদরে ৩৫জন তরুণদের নিয়ে “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া ও যুব সমাজের করণীয়”বিষয়ক একটি আলোচনা সভা পরিচালনা করা হয়।উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলকে ডরপ এর পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়ার বিষয়ে অবহিত করা হয় এবং এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা টিএসএম ফিদা হাসান বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেন বলেই সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ,সংশোধন এবং বাস্তবায়ন ছাড়াও যুবদের ভালো কাজে সম্পৃক্ত করার জন্য নানা কার্যক্রম ও প্রকল্প হাতে নিয়েছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া চুড়ান্ত হলে তা কিশোর-তরুণ ও যুবদের মাঝে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেসা মহিলা কলেজ- ভোলা এর প্রাক্তন অধ্যক্ষ,অধ্যাপক রুহুল আমীন জাহাঙ্গীর বলেন, “ডরপ কর্তৃক উপস্থাপিত আলোচ্য বিষয়গুলো আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তরুণদের অধপতনের শুরুটা হয় ধূমপান দিয়ে।অথচ একটা জাতিকে নেতৃত্ব দেয় এই তরুণরাই।সুতরাং কিশোর ও তরুণদের সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্য থেকে রক্ষা করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া বিশেষ করে ‘ই-সিগারেট উৎপাদন,আমদানি, রপ্তানি,সংরক্ষণ,বিজ্ঞাপন,প্রচার-প্রচারণা,প্রণোদনা, পৃষ্ঠপোষকতা,বিপণন,বিতরণ,ক্রয়-বিক্রয়, ও পরিবহন করার বিধি-নিষেধ’এবং‘খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের বিধি-নিষেধ’ প্রশংসার দাবি রাখে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রবীণ সাংবাদিক আলহাজ্জ্ব মোঃ আবু তাহের বলেন,“সিগারেটের খুচরা বা খোলা বিক্রি নিষিদ্ধ করলে কিশোর-তরুণরা তাদের পকেট খরচের টাকা বাঁচিয়ে পুরো প্যাকেট সিগারেট কিনতে সক্ষম হবে না।ফলে যে সব তরুণ সিগারেট খাওয়া শুরু করেনি তাদের শুরু করার হার কমবে পুরো প্যাকেটের দাম বেশি থাকায়।আর যেসব তরুণ আগে থেকেই সিগারেটে আসক্ত হয়ে গেছে তাদের খাওয়ার হার কমে যাবে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ।আমরা আশা রাখি অতি দ্রুতই এই খসড়াটি চুড়ান্ত রূপ লাভ করবে।
এছাড়া ডরপ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল তরুণ সদস্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া দ্রুত চুড়ান্ত করার দাবি জানান এবং অলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে তাদের বন্ধু মহল ও পাড়া-মহল্লায় আলোচনা করার অঙ্গীকার করেন।উল্লেখ্য,উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডরপ এর মিডিয়া ও অ্যাডভোকেসি কো- অর্ডিনেটর আরিফ বিল্লাহ্, সাংবাদিকবৃন্দ এবং এলাকার অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।